রাঙ্গুনিয়ায় গভীর রাতে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান, কারাদণ্ড ও ডাম্পার জব্দ
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় অবৈধভাবে রাতে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে কারাদণ্ড দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। এ সময় পাহাড় কাটার কাজে ব্যবহৃত দুটি স্কেভেটর (মাটি খননের যন্ত্র) ভেঙে অচল করে দেওয়া হয় এবং একই সঙ্গে একটি ডাম্পার জব্দ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৬ মে) দিবাগত গভীর রাতে (১২টা) উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মঘাইছড়ি এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হাসান।
এদিকে রাতব্যাপী কৃষিজমির টপসয়েল কাটার উৎসবে খননযন্ত্র আর ড্রাম্পট্রাকে একাকার। রাতেও উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে, জোরে ট্রাক চালিয়ে যেন মাটি কাটার উৎসবে পরিনত হয়েছেে হালিমপুর এলাকার।
পাশেই দুটি স্কেভেটর দিয়ে একের পর এক কৃষি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় পাচার করা হচ্ছে। অথচ গেল তিন মাস আগেও সমান কৃষি জমি ছিল এবং ইতিপূর্বে এই জমিগুলোতে আমন আবাদ হয়েছিল। এভাবেই মাত্র কয়েক মাসেই এই স্থানের কয়েকশো কানি কৃষি জমি গভীর করে কেটে ডোবায় রূপ দেয়া হয়েছে। এতে চলতি বোরো মৌসুমে বিশাল এলাকাজুড়ে আবাদ হয়নি বৃহত্তর এই বিলটিতে।
রাতের বেলা পারুয়া ডিসি সড়কের পাশে আলী আকবর হাজীর মাজারের পাশে বাইশ্যেরডেবায় প্রকাশ্যে কৃষি জমির মাটি কাটার মহাযজ্ঞ চলছে দীর্ঘদিন ধরে।
শুধু এই বাইশ্যের ডেবা এলাকাতেই নয়, একইভাবে উপজেলার পারুয়া, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, রাজানগর, ইসলামপুর ইউনিয়নসহ দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রকাশ্যে টপসয়েল কাটার মহাযজ্ঞ চলছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। জানা যায়, ফসলি জমির টপ সয়েল কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পরিবেশ আইন অমান্য করে স্কেভেটর দিয়ে ফসলি জমির টপ সয়েল কাটা হচ্ছে। কৃষকদের লোভের ফেলে মৌসুমী মাটি ব্যবসায়ীরা উঁচু জমি নিচু করে দেয়ার কথা বলে টপ সয়েল কাটার কার্যক্রম চালায়। এসব মাটি কেটে নিকটস্থ ইটভাটা কিংবা অন্যান্য ফসলী জমি ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের কাজে ব্যবহার করেন। ফলে ধ্বংস হচ্ছে কৃষি জমি। জমিগুলো একের পর এক ডোবা নালা ও বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হচ্ছে। এতে যেমন জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্যও। প্রভাবশালী মহল এই মাটি কাটার সাথে জড়িত।
অভিযানের বিষয়ে ইউএনও কামরুল হাসান বলেন, ‘রাতে অবৈধভাবে পাহাড় কাটছে গোপনে এমন সংবাদ পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সাথে নিয়ে মঘাইছড়ি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। তবে অভিযানের খবর পেয়ে সবাই পালিয়ে গেলেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
ইউএনও বলেন, ‘তাৎক্ষণিক ওই ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এছাড়া পাহাড় কাটার কাজে নিয়োজিত দুটি স্কেভেটর ঘটনাস্থলেই ভেঙে অচল করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে মাটি পরিবহনে ব্যবহৃত একটি ডাম্পারও জব্দ করা হয়।’
বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ : +৮৮ ০১৮১১৮৬৭৫৮৪
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত